খুলনায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কর্মী সম্মেলন।
শহিদুল্লাহ্ আল আজাদ.
স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা মাস্টার শফিকুল আলম বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন একটি আদর্শের নাম। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এদেশ আমাদের। এদেশ কাউকেও ইজারা দেয়া যাবে না। জীবন দিয়ে হলেও আমাদের অধিকার রক্ষা করব, ভোটাধিকার রক্ষা করব। বাংলাদেশ সত্য প্রতিষ্ঠা ও ন্যায় ইনসাফের জন্য দাওয়াত দিচ্ছে।
একটি সমৃদ্ধি ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান। খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর থানা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় মিনাক্ষি হল অডিটরিয়ামে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
থানা সভাপতি রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শিহাব উদ্দিনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী খুলনা মহানগরীর কর্ম পরিষদ সদস্য হাফেজ মোকাররম বিল্লাহ আনসারী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য আজিজুর রহমান, জামায়াতে ইসলামীর দৌলতপুর থানা আমীর মাওলানা ফোরকান উদ্দিন মিঠু, থানা সহকারি সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন আনসারী, আড়ংঘাটা থানা আমীর আশরাফ হোসেন, ব্যবসায়ী থানার সহ-সভপতি আজিজুর রহমান স্বপন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খুলনা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহফুজুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার সাইফুজ্জামান, দপ্তর সম্পাদক আল হাফিজ সোহাগ, আড়ংঘাটা থানা সভাপতি আব্দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহিনুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা আব্দুল খালেক হাওলাদার।
এ সময় শ্রমিক নেতা আনিসুর রহমান, দবির উদ্দিন মোল্লা, আফতাব উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান জুনায়েদ, কামরুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম, রফিকুল ইসলাম, দ্বীন ইসলাম, হাসানুল বান্না, আব্দুল হাকিম, তাজমুল হাসান, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, সরকার-রাষ্ট্র শ্রমিকদের মূল্য দেয় না। ফলে শ্রমিকেরা আজকে বঞ্চিত হচ্ছে। শ্রমিকেরা অধিকার হারা হচ্ছে। শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে মালিকদের দালাল শ্রমিকনেতারা। এসব দালালদের চিহ্নিত করতে হবে। আজকে শ্রমিকেরা অর্ধাহারে-অনাহারে, খেয়ে না খেয়ে কাজ করে। কিন্তু তাদের মানবিক মর্যাদা দেওয়া হয় না। তাদের বেতন-ভাতা ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, দালালদের দিয়ে শ্রম আইন করা যাবে না। শ্রম আইন করতে হবে শ্রমিক সংগঠন ও শ্রমিকদের দিয়ে। আজকে গার্মেন্টস ও ওষুধশিল্প নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি নজর রাখতে হবে। তাদের কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেওয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকনেতারা ঐক্যবদ্ধ হলে শ্রমিকদের দুর্দশা লাঘব করা যাবে। মেহনতি শ্রমিকদের জন্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও পূর্ণ অধিকার আদায়ে আমরা সদা সজাগ থাকব।’ তিনি বলেন, ‘শ্রমিকেরা কাজ করে জীবন বাঁচানোর জন্য। শ্রমিক সংগঠনগুলো শ্রমিকদের জন্য কাজ না করে আজ বিষফোড়া হয়ে গেছে। আজকে শ্রমিকদের প্রতারিত করা হচ্ছে। এ ধারা বন্ধ করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ তিনি সকলকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ছায়া তলে এসে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করার উদাত্ত আহবান জানান।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে, ইসলামী আন্দোলনের কর্মী ভাইদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। মামলা দেয়া হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মীরা সত্য কথা লিখলে তাদেরকে মামলা দেয়া হয়েছে, মামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। এ সময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন। আর যারা পঙ্গু ও আহত হয়ে খুবই কষ্টে জীবন যাপন করছেন তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা দ্রুত সুস্থতা দান করুন। অবিলম্বে এ সব পরিবারকে ক্ষতিপুরণ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি তিনি আহবান জানান।