দুর্নীতির অভিযোগে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের নামে মামলা।
নিজস্ব প্রতিনিধি;
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েটে) অবৈধ পন্থায় নিয়োগ দেওয়া ১৩৫ জনের মধ্যে ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সাবেক উপাচার্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়েছে।
২৭ মার্চ (বুধবার) দুর্নীতি দমন কমিশনের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ে উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। (মামলা নং ৩) দুর্নীতি দমন কমিশনের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয় সুত্রটি নিশ্চিত করেন।
মামলায় রুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসেনকে আসামী করা হয়।
মামলার বাদি আমিনুল ইসলাম বলেন, অনুসন্ধান শেষে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য রফিকুল ইসলাম সেখ ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের মঞ্জুরি পাওয়া গেলে আজ ২৭ মার্চ তা রুজু হয়। ১৩৫ জনের নিয়োগে কম-বেশি অনিয়ম হয়েছে। তবে তার মধ্যে ১৭ জনের নিয়োগ নিয়ে দুদক মামলা করলো।
এর আগে, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই চার বছরের জন্য রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ পান ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ। এরপর বিভিন্ন সময়ে তিনি ১৩৫ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ দেন।
২০২১ সালের ৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২তম সিন্ডিকেট সভায় এসব নিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে সাবেক উপাচার্য নিয়োগ বিধি লঙ্ঘন করে নিজের কয়েকজন স্বজনকেও নিয়োগ দেন। পরে এসব নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসিতে অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসির একটি তদন্ত কমিটি নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগগুলি তদন্ত করে। তদন্তে অধিকাংশ অভিযোগের সত্যতা মিলে। ইউজিসি থেকে তদন্ত প্রতিবেদন অধিকতর তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়।
এদিকে, ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে রুয়েটে বিতর্কিতভাবে নিয়োগ পাওয়া ১৩৫ জনের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও এসব নিয়োগ অদ্যাবধি বাতিল হয়নি। যে ১৩৫ জনের নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সেগুলির মধ্যে ৩ জন শিক্ষকসহ ১১৮ জনের নিয়োগের বিষয়টি দুদকের অনুসন্ধানে বাদ দেওয়া হয়েছে।
রুয়েটের বিধি-বিধান অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগসহ কতিপয় নিয়োগে সংক্রান্ত বিষয়টি ফৌজদারি কার্যবিধিতে নেওয়া হয়নি। তবে ১৭ জনের নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। এই ১৭ জনের মধ্যে সাবেক উপাচার্যের আত্মীয়-স্বজন রয়েছেন। যাদের কেউ কেউ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলেও তাদেরকে মৌখিক পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ গণমাধ্যমকে বলেন, মামলা হলে আইনগতভাবে তা মোকাবিলা করা হবে। এ বিষয়ে তার কিছু বলার নেই বলে জানান।