রূপসায় মাছ লুট ও ঘের জবর দখল প্রচেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।
আজিজুল ইসলাম :
খুলনা প্রতিনিধি :
রূপসায় উপজেলার আমদাবাদ গ্রামে তিন লাখ টাকার মাছ লুট, জীবননাশের হুমকি ও ঘের জবর দখল প্রচেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ০৯ এপ্রিল বেলা ১টায় রূপসা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আমদাবাদ গ্রামের মোঃ সামছুর রহমান শিকারীর ছেলে মোঃ সুমন শিকারী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন আমদাবাদ গ্রামের মধ্য থেকে প্রবাহিত ছিরু খাল নামে একটি মরা খাল রয়েছে। যা বিভিন্ন ব্যক্তি খন্ড খন্ড আকারে ভোগ দখল করছে। আমাদের বাড়ি লাগোয়া এখালের একটি অংশ রয়েছে। যার বিআরএস খতিয়ান নং ১/১, দাগ নং ২৪৯। জলাশয়ের পরিমাণ ১৮ শতাংশ। উক্ত ১৮ শতাংশ জলাশয় আমার দাদা মৃত ইউসুফ শিকারীর আমল থেকে ৬০ বছর যাবৎ আমাদের ভোগ দখলে রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে আমার পিতা মোঃ সামছুর রহমান শিকারী, চাচা ফজলুর রহমান শিকারী ও নজরুল ইসলাম শিকারী মাছ চাষ করছে। সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত উক্ত জলাশয় বন্দোবস্ত আনার জন্য আমরা খুলনা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এসিল্যান্ড অফিসে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু বর্তমানে খাস জমি বা জলাশয় বন্দোবস্ত বন্ধ থাকায় আমাদেরকে আপাতত শান্তিপূর্নভাবে উক্ত জলাশয় ভোগদখলের মৌখিকভাবে অনুমতি দেন উপজেলা প্রশাসন।
সে মোতাবেক আমরা তা ভোগ দখলে রয়েছি। কিন্তু আমাদের ভোগদখলীয় উক্ত জলাশয়ের উপর কূ-দৃষ্টি পড়ে আমদাবাদ গ্রামের শহিদুল গাজী পিতা মৃত আঃ রহিম গাজী, মনিরুল গাজী, রেজাউল গাজী, আনোয়ারুল গাজী, আলামীন গাজী ওরফে আলা গাজী সর্ব পিতা শহিদুল গাজী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, দুষ্টচক্র নৈহাটী ইউনিয়ন পরিষদের ০৮নং ওযার্ড মেম্বর কামরুজ্জামান সোহেলের নেতৃত্বে গত ইং ২২-০৭-২০২২ তারিখ বিকালে সঙ্গবদ্ধ হয়ে ঘের জবর দখল ও মাছ লুটের চেষ্টা চালায়। এসময় আমাদের প্রতিরোধের মূখে তারা ব্যর্থ হয়ে গোটা পরিবারকে খুন ও গুম করার হুমকি প্রদান করে চলে যায়। এঘটনার পর আমরা আদালতে ১০৭ ধারা মামলা দায়ের করি। মামলা দায়েরের পর তারা আমাদের ভোগদখলীয় জলাশয়ের বা আমাদের কোন ক্ষতি করবেনা মর্মে আদালতে বন্ড দেয়।
তথাপি গত ১৬/০৩/২৩ তারিখ আমার পিতা মোঃ সামছুর রহমান শিকারী, চাচা ফজলুর রহমান শিকারী ও নজরুল ইসলাম শিকারী বাদী হয়ে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ‘মোকাম খুলনার বিজ্ঞ রূপসা সহকারী জজ আদালতে’ মামলা দায়ের করেন। যা চলমান রয়েছে। মামলা দায়েরের তিন দিন পর ২২/০৩/২০২৩ তারিখ সকালে স্থানীয় ইউপি মেম্বর কামরুজ্জামান সোহেলের নির্দেশে উক্ত বিবাদীরা দলবদ্ধ হয়ে আমাদের জলাশয়ের তিনলাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। পাশাপাশি ১০৭ ধারা মামলায় আদালতে বন্ড দেওয়ার পরও আমাদের মাছ লুটের ঘটনা নিয়ে গত ০৪/০৪/২০২৩ তারিখ আমরা আবারো আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করি।
এদিকে গত ০৫/০৪/২৩ তারিখে আমাদের বাড়ির একটি মরা গাছ কাটার ঘটনায় অভ্যন্তরিন দ্বন্দ্ব নিরসনের লক্ষ্যে ০৮/০৪/২০২৩ তারিখ থানায় বসাবসি হয়। বসাবসির একপর্যায় থানার সামনে আমাদের জলাশয়ের মাছ লুটের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িতরা তাদের বিরুদ্ধে আদালতে কেন মামলা করা হলো এ নিয়ে আমাদের শাসাতে থাকে। এমতাবস্থায় সেখানে ইউপি মেম্বর কামরুজ্জামান সোহেল উপস্থিত হয়ে তিনিও আমাদের হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। এসময় শালিস বৈঠকে থাকা ৭, ৮ ও ৯ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য রেশমা আক্তার প্রতিবাদ করলে সোহেল মেম্বর তাকেও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ হুমকি দিতে থাকেন। এছাড়া ঈদের পর আমাদের তিনি মেরে এলাকাছাড়া করবেন বলে হুমকি প্রদান করেন। তিনি দাম্ভিকতার সাথে বলেন আমার নামে মামলা করবি? কয়টা মামলা করবি। মামলার জন্য আমি রেডি আছি। তার এমন হুমকিতে আমরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছি।