বৈসম্য নিরসনে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রেস ব্রিফিং।
সানজিদ মাহমুদ সুজন :
নিজস্ব প্রতিবেদক:
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন। লিখিত বক্তব্যে জাতীয় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশনের সভাপতি শাহীনুর আকতার বলেন, ২০১৫ সালে সর্বশেষ জাতীয় পে-স্কেল ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানেও প্রাথমিক শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। এই ১০ বছরে দ্রব্যমূল্য যে হারে বেড়েছে, তাতে প্রাথমিক শিক্ষকরা বাজারমূল্য বহন করতে দিশেহারা। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মেয়াদে বেতন বৃদ্ধির আশ্বাস পেলেও তা আদৌ বাস্তবায়ন হয়নি।
বক্তারা আরও বলেন, ২০১৫ সালের পে-স্কেলে ২০টি গ্রেডে বেতন নির্ধারিত হয়েছিল, যার ২০ থেকে ১১তম গ্রেড পর্যন্ত গ্রেডের ব্যবধান নির্ধারিত হয়েছিল সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা। অথচ দশম থেকে প্রথম গ্রেডের ব্যবধান রাখা হয়েছে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফলে ১৩তম গ্রেডধারী সহকারী শিক্ষক এবং ১১তম গ্রেডধারী প্রধান শিক্ষকের জীবনমানের কোনও উন্নয়ন ঘটেনি।
২০০৯ সাল থেকে বন্ধ থাকা প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি আজও আলোর মুখ দেখেনি। প্রাথমিক শিক্ষকদের সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে একই পদে অবসরে যেতে হচ্ছে। তা ছাড়া প্রধান শিক্ষকদেরও বিভাগীয় পদোন্নতি ব্লক করে রাখা হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বৈষম্য নিরসনে সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেডের, সহকারী প্রধান শিক্ষক ১১তম এবং প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড প্রদানের প্রস্তাব করেছেন। বৈষম্য নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সহকারী শিক্ষক এন্ট্রি পদ ধরে দশম গ্রেড ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির দাবি জানাচ্ছি।
সেই সাথে ঢাকা বিভাগের শিক্ষিকারা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মির্জা মোহাম্মদ হাসান খসরু দ্বারা আপত্তিকর কূ-প্রস্তাব না মানলে টাকা দাবি, বিভিন্ন ধরনের শাস্তি বা বদলির হুমকি প্রদানের মতো কথা জানালে,তাদের হয়ে বাংলাদপশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আসমা খানম ঢাকা বিভাগের বিভাগিয় উপপরিচালকের পদোত্যাগ দাবি করেন।
এ সময় সংবাদ সম্মেলন থেকে পৃথক তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তাদের কর্মসূচিগুলো হলো—
১. আগামী ৩ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে একযোগে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।
২. ৮ অক্টোবর বিভাগীয় শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মানববন্ধন এবং বিভাগীয় কমিশনার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।
৩. ১৭ অক্টোবরের মধ্যে দাবি আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ১৯ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদানসহ পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা হবে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মো. আমিনুল হক, গাজীউল হক চৌধুরী, আসমা খানম, সাবেরা বেগম, মো. মোজাম্মেল হোসেন, কামরুল হাসান, মো. মিজানুর রহমান, মো. আনোয়ার উল্লাহ, প্রমোথেশ দত্ত, মো. আনজারুল ইসলাম, ওয়ায়েছ চৌধুরী, টি এম জাকির হোসেন, গাজী সালাউদ্দিন, রবিউল আওয়াল, শিবাজী বিশ্বাস, মো. জাহাঙ্গীর, আহসান হাবিব, মো. মাসুদ প্রমুখ।