শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা সরকারিকরণের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান।

শহিদুল্লাহ আল আজাদ.

স্টাফ রিপোর্টারঃ

খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা সরকারিকরণের দাবিতে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে শিক্ষকরা। খুলনা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোঃ আব্দুর রহীম সরদার স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

এতে বলা হয়, খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা দেশের অন্যতম শিল্পনগরী বিভাগীয় শহর খুলনার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী একটি ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইসলাম তথা জাতীয় শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রসারে ভূমিকা পালনের নিমিত্ত ১৯৫২ সালের ২ এপ্রিল খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা ৫ একর ৩৯ শতক জমির ওপর অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে খানজাহান আলী রোডের উত্তর পার্শে স্থাপিত হয়। মাদ্রাসায় শিশু থেকে কামিল শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয় এবং কামিল শ্রেণিতে হাদিস, তাফসির, ফিকাহ, আদব বিভাগসহ ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস, ভূগোল, সমাজবিজ্ঞান, পৌরনীতি, অর্থনীতি, দর্শন ও আলিম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞান বিভাগসহ কারিগরি ও কম্পিউটার শিক্ষাও চালু আছে।

 

ফাযিল স্নাতক শ্রেণিতে দুটি বিভাগে অনার্স ও কামিল মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। বিজ্ঞান, কারিগরি, কম্পিউটার ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষার মাধ্যমে এ মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা বৈষম্যহীন উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের সাথে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। প্রতিবছরই প্রত্যেক শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল (বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়) অত্যন্ত ভালো। বর্তমানে মাদরাসার ছাত্র সংখ্যা প্রায় দুই হাজার পাঁচ শত।

 

মাদ্রাসায় আছেন অভিজ্ঞ, উচ্চ শিক্ষিত এবং দক্ষ শিক্ষকমন্ডলি। এ পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে তিন বার মাদ্রাসাটি শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এ ছাড়া অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষসহ ৮ জন শিক্ষক জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেছেন। এ মাদ্রাসার বহু ছাত্র উচ্চ শিক্ষা লাভ করে দেশে বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত আছেন। সব দিক থেকে বিবেচনা করলে খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা অনেক আগেই সরকারিকরণ করার প্রয়োজন ছিল। খুলনার সর্বস্তরের মানুষ মাদ্রাসাটি সরকারিকরণ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন। ১৯৮১ সালে মাদ্রাসাটি সরকারিকরণ প্রকল্পাধীনে নেয়া হয়। তারপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারিকরণ বিষয়ে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।

 

১৯৯২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাদ্রাসাটি সরকারিকরণ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিলেও পরে সুকৌশলে তৎকালীন সরকার বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। এতে আরও বলা হয়, বৃটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত দু’টি সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা বর্তমানে ঢাকা ও সিলেটে অবস্থিত। আর তৃতীয় সরকারি আলিয়া মাদ্রাসাটি বগুড়াতে অবস্থিত। ১৯৮৬ সালের ১২ মার্চ থেকে এ মাদ্রাসাটি সরকারিকরণ করা হয়। এ হিসেব অনুযায়ী বৃহত্তর তিনটি বিভাগে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা রয়েছে কিন্তু বৃহত্তর খুলনা বিভাগে আজও সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা স্থাপিত হয়নি। যার ফলে দূর হয়নি বিভাগীয় বৈষম্য। খুলনাবাসী তাই ন্যায্য দাবি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। খুলনার সর্বস্তরের মানুষের দাবি এবং বৃহত্তর বিভাগীয় বৈষম্য দূরীকরণে খুলনা আলিয়া মাদ্রাসাকে সরকারিকরণ করা প্রয়োজন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button