চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এর হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।
সেলিম খান :
কলারোয়া উপজেলা প্রতিনিধি :
কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকে নিয়ম বহির্ভূত হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে। ২৬ শে জুন বিকাল সারে ৫টায় চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনছার আলী সভাপতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
লিখিত বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি মোঃ আনছার আলী, প্রধান শিক্ষক, চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিবছর পাশের হার খুবই সন্তোষজনক। আমার বিদ্যালয়ের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ ১৩/০৮/২০২৪ ইং তারিখে শেষ হইবে। বিগত দুই বছরের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও অনিয়মের কারনে আমি বিদ্যালয়টি সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে পারি নাই। বিগত ১২/০৬/২০১৪ ইং তারিখে আমাকে কিছুই অবগত না করিয়া একটি মিটিং করে। ঐ দিন আমি বিদ্যালয়ের কাজে বিধি অনুসরন পূর্বক যশোর শিক্ষা বোর্ডে ছিলাম।
পরবর্তীতে একই মাসে ২৩/০৬/২০২৪ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের ছুটির মধ্যে আমাকে কিছু না জানাইয়া সভাপতি সাহেব তার নিজ বাড়ীতে মিটিং করে এবং বিধি-বহির্ভূত ভাবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নোটিশ প্রদান না করিয়া ২৩/০৬/২০২৪ ইং তারিখে মূল রেজুলেশন ছাড়া অন্য একটি রেজুলেশন বহির মাধ্যমে সাময়িক বরখাস্ত করিয়াছেন। যাহা আমি কিছুই জানিতাম না। বিধি মোতাবেক আমাকে পরপর কমপক্ষে তিনটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের উপর জবাব চেয়ে নোটিশ প্রেরন করার কথা থাকলেও আমাকে একটি ও নোটিশ প্রেরণ করা হয় নাই। যাহা সম্পূর্ন বিধি-বহির্ভূত এবং বেআইনি।
বর্তমান কমিটি বিগত ২৯/০৯/২০২২ ইং তারিখের মিটিং এ সভাপতি সাহেব তার আপন ছোট ভাই যিনি আমার বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী হিসাবে কর্মরত আছেন। তাহার উপর সভাপতি সাহেবের একক সিদ্ধান্তে বিগত কমিটির নিয়ম ভঙ্গ করিয়া বিদ্যালয়ের আঠারোটি দোকানের ভাড়া টাকা এবং বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন সকল আয় ও ব্যায়ের পরিচালনার দায়িত্ব অর্পন করেন। যাহা সম্পূর্ন বিধি সম্মত নহে।
অদ্যবধি পর্যন্ত আমি প্রধান শিক্ষক বিধিমোতাবেক বিদ্যালয়ের আয়ন-ব্যায়ন কর্মকর্তা হিসেবে আমার নিকট কোন হিসাব দাখিল করে নাই এবং প্রায় ৪,৬৫০,০০০/-(চার লক্ষ পয়ষট্টি হাজার) টাকার হিসাবের আয় ও ব্যায়ের ভাউচার করিতে বলিলে আমাকে জানায় যে, আমার হিসাবের খাতা হারিয়ে গিয়েছে।
এই বিষয়টি সভাপতি সাহেব মানিয়া নিলেও আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে জবাবদিহিতার কারনে মানিতে পারি নাই। এটি একটি মূল কারন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের মূল রেজুলেশন বহি সহ সকল নথিপত্র প্রধান শিক্ষকের নিকট সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও বাজার থেকে ক্রয়কৃত একটি রেজুলেশন বহি ব্যবহার করে।যেখানে আমার ম্যানেজিং কমিটির সর্বমোট ১২ জন সদস্যর নাম থাকার কথা। অথচ উক্ত রেজুলেশন বহিতে ৩৪ জন সদস্য দেখানো হয়েছে। বাকীরা আমার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নহে।
এছাড়া এই কমিটির শুরু হইতে সভাপতি সাহেব নিজেই প্রধান শিক্ষক কে অবগত না করিয়া শিক্ষক ও কর্মচারীদের মৌখিক ও লিখিত ছুটি মঞ্জুর করিয়া আসিতেছেন ।যাহা বিদ্যালয়টির সুষ্ঠভাবে পরিচালনার অন্তরায়। এছাড়া বিগত ২৫/০৭/২০২৩ ইং তারিখের মিটিং এ সভাপতি সাহেব হঠাৎ করিয়া আমার নিকট বিগত ৭ বছরের হিসাব চাহিলে আমি তাৎক্ষনিক ভাবে দেখাতে পারি নাই এবং বিধিবিধানের কথা বলিলে আমার উপর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালায় এবং ইচ্ছা মতো বিভিন্ন খাতে ২,৫১,৫২০/- (দুই লক্ষ একান্ন হাজার পাঁচশত বিশ) টাকার একটি হিসাব ৩৫০/-(তিনশত পঞ্চাশ) টাকা মূল্যের একটি স্ট্যাম্পে জোর পূর্বক স্বাক্ষর করিয়া নিয়া বিদ্যালয়ের সাধারন তহবিলে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। পরবর্তীতে আমি বিগত কমিটির সময়ে সকল আয় ও ব্যায়ের সমস্ত ভাউচার ও রেজুলেশন সভাপতির নিকট দাখিল করিলে সেগুলো কিছুই মানিব না বলিয়া আমাকে জানিয়া দেয়।
এমতাবস্থায় বিগত ০৫/০৫/২০১৪ ইং তারিখে হঠাৎ বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে আমার অফিস কক্ষে প্রবেশ করিয়া আমার উপর সন্ত্রসী কার্যক্রম চালাইলে আমি বিজ্ঞ আদালতে ০৭ ধারা মামলা করি যাহা এখনো চলমান রইয়াছে। উল্লেখ্য যে,বিগত ২৫/০৭/২০২৩ ইং তারিখের মিটিং এ আমার নিকট হইতে বিগত ৭ বছরের বিভিন্ন খাত হইতে ২,৫১,৫২০/-(দুই লক্ষ একান্ন হাজার পাঁচশত বিশ) টাকার হিসাব স্ট্যাম্পে জোর পূর্বক স্বাক্ষর করিয়া নিয়াছে। অথচ মূল স্ট্যাম্পে রহিয়াছে ০১/০৮/২০২২ ইং তারিখ হইতে ২৫/০৭/২০২৩ ইং তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন খাত থেকে উত্তোলন করা টাকা আমি খরচ করিয়াছি। মূলত এই সময়ের বিদ্যালয়ের সকল প্রকার আয়-ব্যয়ের হিসাব তার আপন ভাই বিদ্যালয়ের অফিস সহাকারীর উপরেরই পরিচালনার দায়িত্ব ছিল। যাহা এখনো চলমান আছে।
এ সময় সাংবাদিকদের মাধ্যমে আবেদন করেন যাহাতে ২৩/০৬/২০২৪ ইং তারিখ হইতে বিধি-বহির্ভূত বা বেআইনী ভাবে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত কার্যকর করিতে না পারে এবং আমি পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক ভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করিতে পারি।