অন্যান্য সংবাদ

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে মেরে হাসপাতালে পাঠালেন শিক্ষক, অভিভাবক মহলের ক্ষোভ। 

মাহাবুব আলম

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বেদড়ক মেরে হাসপাতালে পাঠালেন একই প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ। ঘটনাটি গত সোমবার রাণীশংকৈল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাসে ঘটেছে। শিক্ষার্থীর শারীরিক আঘাতের পাশাপাশি মুখে ও ঠোঁটে ক্ষত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা গেছে, মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থী তাহসিন আলীসহ সকল শিক্ষার্থীকে রুমে এসে শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ দাড়াতে বলেন। শিক্ষার্থী তাহসিন বে-খেয়ালে দাড়াতে না পারায় তাকে অতর্কিতভাবে ডাস্টার দিয়ে আঘাত করেন শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ রায়। শিক্ষার্থী তাহসিন জানায়, তাকে ডাস্টার দিয়ে মারার পর সে চরম ভয় পায়। পরে ক্লাস শেষে বাড়ীতে ফিরলে মুখে ঠোট রক্তাক্ত দেখে পরিবারের লোকেরা তার কাছে জানতে চাই। কেন এমন হয়েছে? পরে সে তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। তাহসিনের চাচা মঞ্জুর আলম বলেন, তার ঠোঁটে ও মুখে রক্তাক্ত দেখে আমরা অবাক হয়েছি। তাকে এ কারণ জিজ্ঞেস করতেই সে কান্না শুরু করে।

 

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তাহসিনের চাচা বলেন, সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ রায় পঞ্চম শ্রেণীর ইংরেজি ক্লাশ নিতে এসে সকলকে দাড়াতে বলেন, কিন্তু তাহসিন তা খেয়াল না করায়, সে দাড়ায়নি। এ কারণে শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ তাকে প্রথমে পিঠে পরে মুখে ও ঠোটেঁ ডাস্টার দিয়ে আঘাত করেন। সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথের এমন অনেক ঘটনার অভিযোগ উঠলেও তার বিরুদ্ধে কোন প্রযোজনীয় ব্যবস্থা না হওয়ায়, সে বেপোরায়া হয়ে উঠেছেন। তাই তিনি শিক্ষার্থীদের প্রায় সময় এমন মারপিট দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়ে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করেছেন।

 

রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা চিকিৎসক ফিরোজ আলম বলেন, শিশু শিক্ষার্থী তাহসিনের মুখের থুতনি ও ঠোটেঁ আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

 

এ অভিযোগ অস্বীকার করে রাণীশংকৈল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ রায় মুঠোফোনে বলেন, এমন কোন ঘটনা তিনি ঘটনানি। যদি ঘটতো তাহলে তো বিদ্যালয়ের প্রধানরাসহ অন্যরা জানতো, অভিযোগ হতো। এই ঘটনাকে তিনি পূর্ব শুত্রুতার জেরে সাজানো বলে দাবী করেছেন।

 

রাণীশংকৈল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) ছেলিমা সিদ্দিকার মন্তব্য নিতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।

 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাহিম উদ্দীন মুঠোফোনে বলেন, শিক্ষার্থীর শরীরে আঘাত করা যাবে না। এমন পরিপত্র রয়েছে। তারপরেও কেউ যদি অহেতুক আঘাত করে তাহলে এটি ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি থানায় বলে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button