সানজিদ মাহমুদ সুজন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
শরীয়তপুরের জাজিরায় পূর্বশত্রুতা ও গ্রাম্য রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে মন্টু ব্যাপারি (৫৫) কে ফিল্মি স্টাইলে গাড়ি থামিয়ে চাইনিজ কুরাল রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে এবং সাথে থাকা নিহতের ভাতিজা আরশেদ ব্যাপারিকে কুপিয়ে হাতের আংগুল বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে।এই ঘটনার জের ধরে রাতেই উত্তেজিত জনতা ৩টি বাড়ি ভাংচুর করে।
শুক্রবার (১ মার্চ) এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত মন্টু বেপারী(৬০) সেনেরচর ইউনিয়নের ভোলাই মুন্সী কান্দি গ্রামের আরশেদ আলী বেপারীর ছেলে।
সরোজমিন ঘুরে বিভিন্ন মানুষের বক্তব্য হতে জানা যায়,দীর্ঘ কয়েক যুগ যাবত সেনেরচড় ইউনিয়নে মাদবড়, ব্যাপারি, সরদার, মোল্লা বংশের মধ্যে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে আসছে।
এর ধারাবাহিকতায় গত ৩ বছর পূর্বে রক্তক্ষয়ি সংঘর্সে দুই পক্ষের দুজন মারা গিয়েছিলো, যার একটি পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন মন্টু ব্যাপারি গং ও অপর আরেকটি পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইমদাত মাদবর ও করিম ব্যাপারি গংরা।গত ছয়মাস পূর্বে করিম ব্যাপারি বা করিম মাস্টারকে কতিপয় সন্ত্রাসীরা জাজিরা পৌরসভার শাহী মসজিদ এলাকায় ৫ -৬ জনের একটা দল মারধর করে ও পা পিটায়ে ভেংগে ও ফাটিয়ে ফেলে।এর পর করিম মাস্টারের পরিবার এ নিয়ে মন্টু ব্যাপারি গংদের মামলা দেয়।যদিও মন্টু ব্যাপারি ও করিম মাস্টারের জাজিরা পৌরসভায় নয়।তাদের বাড়ি সেনেরচড় ইউনিয়নের, চরধোপুড়িয়া ভোলাই মুন্সি কান্দি।
গতকাল দুপুরে জাজিরা ইউনিয়নের বয়াতি কান্দি এলাকায় একটি বিয়ের আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন মন্টু ব্যাপারি ও তার ভাতিজা।অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে এমদাত মাদবরের বাড়ির সামনে এলে মটর সাইকেলের গতিরোধ করে চাইনিজ কুরাল রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপানো শুরু করে, এসময় তার ভাতিজার হাতে কোপ লাগলে সে গাড়ি নিয়ে পরে যায় ও মন্টু ব্যাপারিকে টেনে হিচরে বাড়ির ভিতরে ঘড়ের মধ্যে নিয়ে কোপায় পরে মৃত্যু নিশ্চিত হলে সন্ত্রাসিরা চলে যায়।
এ নিয়ে এলাকায় থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।রাতেই মন্টু ব্যাপারির লাশ হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর থানায় নিয়ে সুরাহতালের জন্য শরীয়তপুরের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের সাথে থাকা ভাতিজা আরশেদ ব্যাপারি বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করতে স্বক্ষম হয়েছে,আইন প্রয়োগের স্বার্থে প্রকাশ করা হলো না।
ফারুক সরদারের স্ত্রী নিশি আক্তার বলেন, বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে প্রথমে বাবু বেপারীর হাতে কোপ দেওয়া হয় পরে মিন্টু বেপারীর ওপর কোপ। তারা দুজন আত্মরক্ষার জন্য মালেক বেপারীর ঘরে ঢুকে যায়। পরে ঘরের দরজা ভেঙে তাদের কোপানো হয়। যারা এমন নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা করে তাদের ফাঁসি চাই।
জাজিরা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিনের শত্রুতা ছিল। শত্রুতার জের ধরেই মন্টু বেপারী নামের একজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মন্টু বেপারীর মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।