স্বাস্থ্য ও জীবনযাপন

সিন্ডিকেট লাগেজ ব্যাবসায়িদের কর্মকান্ডে বিপাকে পুলিশ প্রশাসন

 

 

পদ্মা সেতু (দক্ষিণ) থানা, শরীয়তপুর।

 

সানজিদ মাহমুদ সুজন,নিজস্ব প্রতিবেদক শরীয়তপুর :

 

কসমেটিক ও লাগেজ ব্যাবসায়িদের ভয়াবহ দৌরাত্ম সৃষ্টি হয়েছে পদ্মা দক্ষিন প্রান্তের অঞ্চলের মানুষের মাঝে।প্রায় ৪ থেকে ৫টি সংগবদ্ধ চক্র,কয়েকটি প্রভাবশালি মহলের ছত্রছায়ায় দির্ঘদিন যাবৎ এ ব্যাবসা করে আসছে।আর এই ব্যাবসায়িদের ঘৃন্য কৌশলে ধরাশায়ি হচ্ছে,মধ্যবিত্ত পরিবারের কিছু মানুষ ও প্রশাষনিক ও আইনশৃংখলা বাহিনির কর্মকর্তাগন।এই লাগেজ ব্যাবসায়িদের কারনেই গত ১৩ই মে মারা গেছেন জাহাঙ্গীর মীর ও সর্বশেষ ফাঁসলেন শরীয়তপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(নড়িয়া সার্কেল)রাসেল মনির ও পদ্মা দক্ষিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

বিশস্ত সূত্র মতে ও এলাকায় খোজ নিয়ে জানা যায়,প্রায় বছর ছয়েক পূর্ব হতেই পদ্মা দক্ষিনাঞ্চলের প্রভাবশালি কিছু মানুষ, মধ্যবিত্ত,কলেজ পড়ুয়া যুবশ্রেনীর লোকের মাধ্যমে লাগেজ ও ডলার ব্যাবসা পরিচালনা করে আসছে।
প্রায় ২০০-৩০০ জনের মতো লোক শরীয়তপুর ও মাদারীপুর এর অন্তরগত এলাকায় ৪ হতে ৫টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে এরা কাজ করে।এদের প্রত্যকের রয়েছে দূবাই,ভারত,থাইল্যান্ডের মাল্টিপল ও রেসিডেন্সভিসা।এদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে বেতনভুক্ত কর্মচারি আবার কেউ চাকুরীর পাশাপাশি নিজেরাও মূলধন ইনভেস্ট করছে।

আনুমানিক গত ২০২২ শালের নভেম্বর মাসে ঢাকা বিমানবন্দর কাস্টমস পুলিশের হাতে ধরা পরেন জাহাঙ্গীর মির গ্রাম সদর আলী মাদবর কান্দি পোঃ বিকে নগড় থানা জাজিরা জেলা শরীয়তপুর। পরে গত ১৩ই মে ২০২৩ এ জেলহাজতে তার মৃত্যু হয়। অথচো সে ছিলো বেতন ভুক্ত একজন কর্মচারি।অভিযোগ ছিলো মৃতব্যাক্তির মেয়ের।আর এই গ্রুপটি পরিচালনা করতেন আকতার মাদবর নামক ব্যাক্তি।

এছারাও এখানে পদ্মা দক্ষিনাঞ্চলের একটি সক্রিয় গ্রুপের হয়ে কাজ করে আসছে বকুল, সাইদুল,সাদ্দাম,ইউসুফ শনি,বাদশা,সাদ্দাম,শাহিন,ঠান্ডু, সেকেন্দার সহ আরো কয়েকজন। এদের মধ্য হতে কেউ কেউ নিজেদের অর্থ লগ্নি করেছেন বলে শোনা যায়।আবার কেউ বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির কাজো করেছেন।

সূত্র মতে এই গ্রুপটিতে গত চারমাস যাবৎ অর্থ ভাগাভাগি ও লাভ নিয়ে দ্বন্দ হয়ে আসছিলো।এরি সূত্র ধরে গত ২১-মে দুপুরে মো: শাহিন আলম শেখ এবং সেকান্দার মাদবর বাংলাদেশ মালামাল নিয়ে আসলে,যশোহর হতে তাদেরকে অনুসরন করে তাদেরি দলের লোক, পথিমধ্যে পদ্মা সেতু এলাকায় পৌছা মাত্রই তাদেরকে বাস থেকে নামিয়ে তাদের সাথে থাকা ডলার, কসমেটিক ও স্বর্ন এবং মোবাইল ফোন সহ মোট ৭৬ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ ডলার ও দ্রব্যসামগ্রি নিয়ে নেয়।

এ নিয়ে শাহিন ও সেকেন্দার থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে ঐ দিনি প্রাথমিক ভাবে রশিদ চোকদার ও মজিবর শেখকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞেসা বাদ করলে তারা ঘটনার সত্যতা স্বিকার করেন ও ৩দিনের মধ্যে সমষ্যার সমাধান করবেন বলে জানান।কিন্তু থানা হতে বের হয়েই তারা ছলচাতুরী শুরু করেন। তখন ওসি বিরক্তি প্রকাশ করে, আসামিদের সন্ধানে ঐ বাড়ির মহিলা পুরুষ সবাইকে ২২ তারিখ রাতে থানায় নিয়ে আসেন জিজ্ঞেসবাদ করতে।জিজ্ঞেসবাদ শেষে পরদিন সকালে তাদেরকে স্থানীয় গ্রামপুলিশের মাধ্যমে ছেরে দেন।

পরে এই ঘটনায় গত ২৩ তারিখ পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয় এবং একই দিন মামলার ৮ নং আসামি আ:রশিদ চোকদার(৬০) নামে একজনকে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানা পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।

পরে গ্রেফতার এরাতে অন্য আসামীরা হাইকোর্টে আত্মসমর্পন করে।ঐ দিন রাতে বাদিপক্ষ আসামীদের দেখতে পেয়ে আটকিয়ে থানায় ফোন দিলে, পুলিশের হাতে বকুল ও সাদ্দাম গং ধরা পরেন। এক পর্যায়ে মূল অভিযুক্ত বকুল চোকদার ও সাদ্দাম চোকদারের বাবা মামলা ছাড়ার শর্তে তাদের চাচাতো ভাই ঠান্ডু চোকদারকে প্রায় ১ কোটি টাকা সমমূল্যের দুইটি দোকান লিখে নিয়ে, রশিদ চোকদারকে ৭২ লক্ষ টাকার ৫ টি চেক প্রদান করে বলে জানা যায়।রশিদ চোকদার শালিশসহ থানায় গিয়ে ভুক্তভোগীদের ৭২ লক্ষ টাকার চেক হস্তান্তর করেন।তারপরেও পুলিশ আসামিদের জেল হাজতে প্রেরন করেন।

পরে আসামিদের কোর্টে উঠালে কোর্ট আসামি পক্ষের আবেদন আমলে নিয়ে,হাসপাতালে প্রেরন করে এবং গত রোববার (১১ জুন) আদালত পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে ওই আদেশের কপি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ৯ জুলাইয়ের মধ্যে ‘নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন, ২০১৩ -এর ৫ ধারা অনুযায়ী ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।শরীয়তপুরের আদালত পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কিন্তু আসামি গন জামিনে এসে,বর্তমানে ছিনতাই করা টাকা ফেরত না দেয়ার কৌশল হিসোবে এবং আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানোর কারণে ,ক্ষিপ্ত হয়ে,নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির এবং পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে,জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দেয়ার পাশাপাশি একপেশে সংবাদ প্রচারের আশ্রয় নিয়েছে।যার ফলে ভুক্তভোগী মো:শাহিন আলম শেখ এবং সেকান্দার মাদবরের,ছিনতাই হওয়া টাকা ফেরত না পাওয়ার শঙ্কার পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন,এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

রশিদ চোকদার বলেন বেশ কিছু ডলার ও কসমেটিক মালামাল পুলিশ উদ্ধার করে, সাইদুলের বোনের বারি থেকে,যারা অন্যায় করেছে তারাই কেবল শাস্তি পাক, আমি কেনো বাবা,এটা বলে তিনি কান্নায় ভেংগে পরেন।তিনি বলেন ওসি সাহেব ও সার্কেল আমাকে জিজ্ঞাসাবাদে থানায় নিয়েছে,মেরেছে তাতে কোন দূঃখ নাই, কিন্তু আমার নাতি,স্ত্রী,বউ কে থানায় নিয়েছে এটা ঠিক করে নাই,আমি এর শেষ দেখবো।

কয়েকজন গনমান্য স্থানীয় ব্যাক্তিরা বলেনপদ্মা সেতুএলাকায় ঘুরে ফিরে এরাই সকল সিন্ডিকেটের সাথে জরিত।প্রত্যেকটি অন্যায়ের বিচার হওয়া জরুরী।পুলিশ অতি রঞ্জিত হয়ে এখানে কাজ করেছে।এই খবরে গোটা এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এই ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পর পরি শরীয়তপুর পুলিশ সুপার মো: সাইফুল হক তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন এবং ওসি মোস্তাফিজুর রহমানকে পদচ্যুত করে পুলিশ লাইনে নিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button