বগুড়ায় কাফনের কাপড় পরে অনশন।
মিরু হাসান,
স্টাফ রিপোর্টর
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে লোকবল প্রত্যাহার ও ভেন্যু বাতিলের প্রতিবাদে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশন শুরু করেছেন রুমেল নামে এক যুবক। রোববার (৫ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় ফুটপাতে বসে ওই যুবক অনশন করেছেন।
রুমেলের পেছনে টানানো ব্যানারে লেখা বগুড়া জেলার উন্নয়ন এবং বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশন। বুকে ঝুলানো প্ল্যাকার্ডেও একই বার্তা লেখা। রুমেল বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি চ্যানেল বগুড়া নামে ফেসবুক পেজের কনটেন্ট ক্রিয়েটর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হুমায়ন আহম্মেদ রুমেল বলেন, বগুড়ায় প্রতিবাদী এবং অলাভজনক কর্মকাণ্ড করি। জন্মের পর থেকে অনেক সরকার দেখেছি। সেটা আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জাতীয় পার্টিই হোক। তবে বগুড়ার সঠিক উন্নয়ন কিন্তু কেউ করেনি। দেশের অন্য জায়গার যে উন্নয়ন হয়েছে সে তুলনায় উন্নয়নের দিক থেকে বগুড়া অনেক পিছিয়ে।
তিনি বলেন, বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে খেলা না হলেও একটা আশার জায়গা ছিল। স্টেডিয়াম লাইফ সাপোর্টে ছিল। খেলা হচ্ছিল না। তারপরও সান্ত্বনা ছিল বগুড়ায় একটি স্টেডিয়াম এখনো টিকে আছে। একদিন না একদিন খেলায় ফিরবে। কিন্তু এর আনুষ্ঠানিক মৃত্যু ঘটে গেলো যখন এখানকার কর্মকর্তারা প্রত্যাহার হলো, যন্ত্রপাতি প্রত্যাহার হলো, এমনকি মাঠের সীমানার দড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হলো। তখন মনে হলো আমাদের গর্বের জায়গা আর কিছুই থাকলো না।
রুমেল আরও বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে এবং আমার পক্ষেই এটা সম্ভব। অনশন সবাই পারে না। ধৈর্যও সবার নেই। আমি এটা পারবো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনশন করে অনেক কিছুই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মূলত সে লক্ষ্যে আমার এ অনশন। আমি যদি এটা করতে পারি, তবেই এই দাবি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সরকার দাবি না মানা পর্যন্ত আমি আমরণ অনশন করেই যাবো।
জানা গেছে, বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে দ্বন্দ্বে স্টেডিয়ামের মূল মালিক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাছে স্টেডিয়ামটি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। গত বৃহস্পতিবার এনএসসি সচিব বরাবর পাঠানো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সই করা এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
ওই দিনই শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে কর্মরত বিসিবির ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বগুড়া থেকে প্রত্যাহার করে মিরপুরে বিসিবির কার্যালয়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়। এছাড়া স্টেডিয়ামে থাকা রোলার, সুপার সপার, পিচ কাভারসহ খেলার যাবতীয় সরঞ্জাম এবং ড্রেসিংরুমের আসবাব ঢাকায় নিয়ে গেছে বিসিবি। এ ঘটনার পর বগুড়া খেলোয়াড়, দর্শক ও ক্রীড়া সংগঠকসহ সাধারণ মানুষ বিসিবির এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।