অন্যান্য সংবাদলেখাপড়া

বিলবোর্ড টাঙিয়ে দোয়া চাওয়া শিক্ষার্থীদের ঈর্ষণীয় সাফল্য

পাবনা প্রতিনিধি।


আলোচিত এই বিলবোর্ড

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে রাস্তার মোড়ে বিলবোর্ড টাঙিয়ে দোয়া চেয়েছিল পাবনার বেড়া উপজেলার পাঁচ পরীক্ষার্থী। এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। তবে সব সমালোচনাকে পেছনে ফেলে তারা ঈর্ষণীয় সাফল্য পেয়েছে।

গত সোমবার প্রকাশিত এসএসসির ফলে পাঁচজনের মধ্যে চারজনই জিপিএ ৫ পেয়েছে।

আলোচিত সেই পাঁচ শিক্ষার্থী হলো- বেড়া উপজেলার জাতসাকিনী ইউনিয়নের কাবাসকান্দা গ্রামের ইফতেখার উদ্দিন আহমেদের ছেলে সুহায়িব আহমেদ সাহেদ, একই গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে অমিত হাসান রাফিদ, একই ইউনিয়নের নয়াবাড়ি গ্রামের মোহন মোল্লার ছেলে নাহিদ হাসান, আহম্মেদপুর ইউনিয়নের দ্বারিয়াপুর গ্রামের খন্দকার শহিদুল্লার ছেলে সামী খন্দকার ও একই গ্রামের খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছেলে খন্দকার মাশরাফী। তাদের মধ্যে রাফিদ ছাড়া অন্যরা পেয়েছে জিপিএ ৫। রাফিদ পেয়েছে ৪.৯৬। তারা সবাই উপজেলার কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।

তাদের সাফল্যে এখন সবাই প্রশংসা করছেন। এতে খুশি শিক্ষার্থীরাও। তারা জানায়, বিলবোর্ড টাঙিয়ে দোয়া প্রার্থনার বিষয়টি যখন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, তখন অনেকেই তাদের নিন্দা করে যে, তারা পড়াশোনা বাদ দিয়ে এসব করছে। কিন্তু তাদের বিশ্বাস ছিল যে, তারা ভালো কিছু করবে। এই ফলাফলে তারা অত্যন্ত খুশি বলে জানায়।

সুহায়িব আহমেদ সাহেদ ও নাহিদ হাসান জানায়, তাদের মা-বাবাও অনেক খুশি। যারা সে সময় গালমন্দ করেছিলেন, তারাও খোঁজখবর নিচ্ছেন, প্রশংসা করছেন। এটা অবশ্যই ভালো লাগছে। তবে তারা সবাই যদি জিপিএ ৫ পেত তাহলে আরও ভালো লাগত।

সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলামও। তিনি বলেন, বিলবোর্ড দেখে অনেকেই সমালোচনা করলেও সে সময়ই তাঁরা বিষয়টি ইতিবাচক ও সৃজনশীলতার দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখেছিলেন। আজ তারা সেটি প্রমাণও করেছে। শুধু তারা নয়, তাঁর স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১২৬ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৯৫ জন, এ জন্য তাঁরা খুবই আনন্দিত।

বিলবোর্ড টাঙানোর উদ্দেশ্য নিয়ে সামী খন্দকারের ভাষ্য- ‘আসলে এটি নিয়ে আমাদের তেমন পরিকল্পনাই ছিল না। আমরা সবাই ভালো বন্ধু, সপ্তম শ্রেণি থেকে একই স্কুলে পড়াশোনা করেছি, এক সঙ্গে চলাচল করি। পরীক্ষার আগে গত জুন মাসে স্থানীয় একটি প্রেসের সামনে দাঁড়িয়ে পাঁচ বন্ধু কথা বলছিলাম। সেখানে একটি ডিজিটাল বিলবোর্ড দেখে মাথায় আসে, এরকম একটা বিলবোর্ড আমরা বানাতে পারি কিনা। তখন নিজেরাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিই বিলবোর্ড বানানোর।’

খন্দকার মাশরাফী জানায়, বিলবোর্ড বানাতে খরচ হয় ১ হাজার টাকা। ৫ জুন কাশিনাথপুর মোড়ে পুলিশ বপের পাশে, ফুলবাগান চত্বরে ও বিজ্ঞান স্কুলের সামনে- এই তিন জায়গায় তিনটি বিলবোর্ড টাঙিয়ে দেয় তারা। ‘আমরা কেউ ফেসবুকে বিলবোর্ডের কোনো ছবি পোস্ট করিনি। কাশিনাথপুর মোড়ে পুলিশ বপের পাশে টাঙানো বিলবোর্ডের ছবি কেউ একজন ফেসবুকে শেয়ার করলে ভাইরাল হওয়ার পর আমাদের নজরে আসে’ বলছিল মাশরাফী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button