জাতীয়

মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশ ছাড়াল

চাল, ডাল, আটা, তেল, মাছসহ সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যে ঊর্ধ্বমুখী, খোদ সরকারি সংস্থা পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদনেই তা উঠে এসেছে।

এত দিন বিভিন্ন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কথা বলে আসছিল। এখন বিবিএসের প্রতিবেদনই বলছে, ১৬ মাস পর ফেব্রুয়ারিতে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দাম সহনীয় থাকলেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে খাদ্যপণ্যের দাম।

 

গতকাল সোমবার ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিএস।

 

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সরকার মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যদিও মূল্যস্ফীতি এখন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। বিশেষ করে ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাগামছাড়া হয়ে গেছে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্য আরও এক দফা বেড়েছে।

 

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশে এখন সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদেরা।

 

বিবিএসের প্রতিবেদন বলছে, ফেব্রুয়ারি মাসে গড় মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যে পণ্য ১০০ টাকায় মিলত, এখন সেই পণ্য ১০৬ টাকা ১৭ পয়সায় কিনতে হচ্ছে মানুষকে। তথ্য বলছে, জানুয়ারি মাসে গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ দাঁড়িয়েছে, আগের মাসে যা ছিল ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অবশ্য খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ১০ শতাংশে নেমে এসেছে, জানুয়ারিতে যা ছিল ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।

 

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আমদানি পর্যায়ে সয়াবিন তেলের শুল্ক কমানো হয়েছে। এক কোটি পরিবারকে সুলভ মূল্যে পণ্য দিচ্ছে সরকার। টিসিবির ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

 

এদিকে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা মালয়েশিয়ার একজন শ্রমিকের চেয়ে কম বেতন পেয়েও তাঁদের চেয়ে বেশি দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন ঢাকার শ্রমিকেরা। আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দেড় থেকে দুই গুণ বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে ঢাকার একজন শ্রমিককে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button