জাতীয়

কম দামে পণ্য কিনতে ১ কোটি মানুষকে বিশেষ কার্ড দেব: প্রধানমন্ত্রী

sheikh haina vorerkiron

সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কম দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে এক কোটি মানুষকে বিশেষ কার্ড প্রদান করা হবে।

মঙ্গলবার গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এক কোটি মানুষকে টার্গেট করেছি, আমরা তাদের বিশেষ কার্ড দেব- যাতে তারা ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারে।’

ইতোমধ্যেই কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন ৩৮ লাখ লোক আর্থিক সহায়তা পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই এদের সঙ্গে আরও অনেককে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং শেষ পর্যন্ত মোট এক কোটি মানুষ এই কার্ড পাবে।’

তিনি উল্লেখ করেন ইতোমধ্যেই ৫০ লাখ লোককে কার্ড দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা ১০ টাকায় চাল কিনতে পারে।

ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে টাস্কফোর্স গঠনের কথা বলেছি। মজুদ তেলের কোথাও ‘হোল্ডিং’ হচ্ছে কি না- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘ভোজ্যতেলের ভ্যাট কমিয়ে দেওয়া বা একটু সমন্বয় করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। যাতে রমজান মাসে কোনো সমস্যা না হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি হলে তখন আর খুব বেশি করার কিছু থাকে না। তখন একটু কমপ্রোমাইজ করতেই হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের কারণে (রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ) পরিবহণ ব্যয় অর্থাৎ কার্গো ভাড়া খুব বেড়ে গেছে। কারণ সয়াবিন তেল আমাদের ব্রাজিল থেকে এবং পামওয়েল মালয়েশিয়া থেকে আসে।

ভোজ্যতেলের বিষয়ে দেশ এখন শতকরা ৯০ ভাগ আমদানি নির্ভরশীল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা সর্ষের কয়েকটি বীজ আবিষ্কার করেছেন যার ভালো উৎপাদন হবে। আগামী কয়েক বছরে পেঁয়াজ আর বাইরে থেকে আনতে হবে না, আমরাই রপ্তানি করতে পারব। এ ব্যাপারেও বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন।

তিনি বলেন, প্রত্যেকটা জিনিস যেন আমরা নিজেরা উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারি সে রকম একটা অবস্থানে আমাদের যেতে হবে। কারো মুখাপেক্ষী হয়ে যেন থাকতে না হয়- সে জন্য আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।

সরকারের কাছে যথেষ্ট খাদ্য মজুদ আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এখনো ১৮ লাখ টন খাদ্য মজুদ আছে আমাদের। সেখানে কোনো অসুবিধা নাই।’

ফসল উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি এ সময় বলেন, ‘কারো এতটুকু জমি যেন অনাবাদী না থাকে, যে যা পারেন সেটাই উৎপাদন করবেন। প্রত্যেকটা এলাকাতেই কিছু না কিছু উৎপাদন হবে। সেটাই আমার লক্ষ্য। তাতে আমাদের যে খাদ্য চাহিদা সেটা যেন পূরণ করতে পারি।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি প্রদান, জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে আন্তর্জাতিক প্রামান্য দলিলে স্থান করে দেওয়া এবং সর্বশেষ জয় বাংলাকে জাতীয় শ্লোগান ঘোষণায় তার সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান আমাদের হয়েছে। স্বাধীনতার চেতনা যা মুছে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল সেগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করে একে একে সামনে নিয়ে আসার কাজটা আমরা করতে পেরেছি।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button